এই শীতে অবিবাহিত ফ্রিলান্সার ভাইদের বিবাহ করার কিছু টিপস

এই তিব্র শীতে, অবিবাহিত ফ্রিলান্সার ভাইদের আকুতি আমি বুঝি। তাদের কষ্ট আমাকে কাঁদায়!  বাস্তবতা হচ্ছে, ফ্রিলান্সারদের এখনো কোন মেয়ের বাপ সহজে মেয়ে দিতে চায় না 😀 কারন এটা কি জিনিস সেটা দেশের উপরের লোকেরাই ঠিকমত জানে না, মেয়ের বাপত সাধারন পাবলিক 🙂 যদি কোন ফ্রিল্যান্সার ভাই ধুমধাম করে বিয়ে করে, ফেসবুকে ছবি পোস্ট দেয়, তবে বুঝতে হবে ওখানে বড় কোন ঘাপলা আছে। ভাবির সাথে অনেক আগে থেকেই তার লটর পটর 😀 মেয়ের বাপ বিয়ে না দিয়ে যাবে কই 😉 ফ্রিলান্সারের যায়গায় মুরগির ব্যাপারি হলেও বিয়ে দেয়াই লাগত। কিছু করার নেই, অসহায় পিতা। তাই অবিবাহিত ফ্রিলান্সার ভাইয়েরা, এসব সুন্দরী ভাবিদের দেখে হতাশ হবার কিছু নেই। চাইলে আপনিও পাবেন এই ধরনের ডানাকাটা পরী (পার্লারে সাজান না, জেনুইন পরী) নিজের ঘরে আনতে। এই শীতে কিভাবে বিয়ে করা যায় তার কিছু ইউনিক আইডিয়া দিচ্ছি।
 
১. ছেলে কি করে জিজ্ঞেস করলে ভুলেও ফ্রিলান্সিং বলা যাবে না। আগেই বলেছি এই জিনিস বেশির ভাগ শিক্ষিত মানুষই বুঝে না 🙂 মনে করে ফ্লেক্সিলোড বা কম্পোজ করার মত কোন কাজ হয়ত 🙁 তাই বলতে হবে আমেরিকান বড় কোম্পানিতে এত বেতনে (বেতন অবশ্যই লাখের উপর বলতে হবে) চাকুরি করি। প্রয়োজনে গ্রাফিক রিভারের ভিজিটিং কার্ড কপি করে কার্ড বানাতে হবে। এগুলো দেদারসে বিলাতে হবে 😀
 
২. ডলারের স্ক্রিনসট মোবাইলে সব সময় রাখতে হবে। প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে দেখাতে হবে।
 
৩. মেয়ের বাপ চাচাদের নিয়ে ATM থেকে টাকা তুলতে যেতে হবে। বিশেষ করে ভাল রেস্টুরেন্টে ভাল খাবার দাবার পর বিল দেয়ার সময় । ১ লক্ষ টাকার লিমিট না দিয়ে কেন ৫০ হাজার টাকার ডেইলি লিমিট দিল এই জন্য ব্যাংক ওয়ালাদের হাল্কা গালমন্দ করা যেতে পারে 🙁
 
৪. ভাল কোন বায়ারের সাথে খাতির থাকলে, তাকে রাজি করিয়ে ইউটীউবার “Freelancer Nasim” এর মত করে তাকে স্কাইপিতে নিয়ে আসতে হবে। আপনার বিয়ের কথা চলছে, এই বলে হবু শ্বশুরকে ক্যামেরায় বায়ারকে লাইভ দেখাতে হবে 🙂 ভুলেও কাল চামড়ার কোন বায়ার আনা যাবে না, পাত্রি পক্ষ ভয় পাবে 🙂 অবশ্যই সাদা চামড়ার 🙂 , বুইড়া বায়ার হতে হবে, বিশেষ করে মোটা আমেরিকান বায়ার হলে ভাল হয়। আপনার ভ্যালু বাড়বে। তাকে আগে থেকেই শিখিয়ে দেবেন, যেন আপনার অনেক প্রশংসা করে।
 
৫. এত ডলার কামাই করেছেন, সেখান থেকে কিছু ডলার ঘুষের পিছনে ব্যয় করতে হবে। মানে হবু শালা, শালি, চাচা শ্বশুর মামা শ্বশুর সবাইকে গিফট দিয়ে হাতে রাখতে হবে। ওরা আপনার হয়ে কাজ করবে 😉
 
৬. বায়ারকে দিয়ে ইউরোপ আমেরিকা যাবার ভুয়া ইনভাইটেশন রেডি করতে হবে। সেগুলো দেখিতে বলতে হবে বিদেশ যাবার অনেক অফার আছে, কিন্তু দেশের এই উন্নয়নের জোয়ার দেখে, দেশেই থাকতে চাইছি। দেশের জন্য কিছু করতে চাই।
 
৭. কথায় কথায় ইংরেজি বলতে হবে। ছেলে ভাল ইংরেজি জানে এটা বোঝাবার জন্য!
 
৮. হবু শালা শালিকে ফ্রিলান্সিং শেখাবার অফার দিতে হবে। কিভাবে মাসে হাজার ডলার ইনাকাম করা যায়, বলবেন সেটা তদের সহজেই শিখিয়ে দেবেন। ওরা আপনার হয়ে কাজ করবে 🙂 বিয়ের পর রাজনীতিবিদদের মত এসব প্রতিশ্রুতি ভুলে গেলেও চলবে, সমস্যা নেই, কারন জিনিস এখন আপনার ঘরে। বেশি চাপাচাপি করলে ওদের লারাভেল, অথবা C++ ধরিয়ে দেবেন 😀
 
৯. আপানার এলাকার সরকারী বড় কর্মকর্তাদের অফিসে নিয়মিত যাতায়েত করবেন। বলবেন আপনি ফ্রিলান্সিং করেন। দেখবেন একেবারে গলে যাবে। কারন এটা এখন সরকারের টপ প্রায়োরিটি। দেখবেন আবদার ধরবে তাকেও শিখিয়ে দিতে। এই সুজগে তার সাথে কিছু সেলফি তুলে রাখবেন 😀 ভাল সম্পর্ক যদি হয়ে যায়, তবে তাকে দিয়েও বিয়ের সুপারিশে কাজে লাগাতে পারবেন। শ্বশুর বাড়ির লোকদের তার সাথে আপনার সেলফি দেখাবেন।
 
১০. ফ্রিলান্সারেরা মুলত অসামাজিক প্রাণী, মানে সমাজে খুব একটা মেশে না। এটা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এলাকায় কিছু দান খয়রাত করতে হবে। সমাজ সেবা মুলক কাজ করতে হবে। সেগুলোর অবশ্যই ছবি তুলে রাখতে হবে।
১১. এলাকার ধান্দাবাজ সংবাদিকদের হাত করে লোকাল বা জাতীয় পত্রিকায় আপনার সাফল্যের খবর প্রচার করতে হবে। এগুলোর পেপার কাটিং সংরক্ষণ করতে হবে। পাত্রীপক্ষকে দেখাবার জন্য।
 
১২. দেশে এখন অনেক টিভি চ্যানেল। একটু খরচ করলে সহজেই আপনার সাফল্য টিভিতে প্রচার করতে পারবেন। এটার ভিডিও ক্লিপ সংগ্রহ করেন। হবু শ্বশুরকে দেখান।
 
উপরের সব টেকনিক প্রয়োগ করার পরেও যদি সুন্দরী কোন অষ্টাদশী পাত্রি রেডি না করতে পারেন। তবে আমি বলব, মিয়া ফাইজলামি করেন?  আপনি যে ফ্রিলান্সার তার প্রমান আগে দেন! একজন ফ্রিলান্সার, বিশ্বের হাজার হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে, জব উইন করে। আর এত সামান্য একটা বিয়ের পাত্রি জোগাড় করা। এটা একজন ফ্রিল্যন্সারের জন্য ডালভাত। আশা করি সহজেই সুন্দরী অষ্টাদশী পাত্রি জোগাড় করতে পারবেন।
 
অবিবাহিত ফ্রিলান্সার ভাইয়েরা এই শীতে সবাই ভাল থাকবেন। শরীরের যত্ন নেবেন। স্বাস্থ্যই সকল সুখের মুল। এটা বিয়ের পরে আরও ভাল বুঝবেন।
 
ধন্যবাদ!

Similar Posts