ফ্রিলান্সার যখন হেমায়েতপুরে

এক যে ছিল এক ফ্রিলান্সার। খালি ফ্রিলান্সিং করত। দিন নেই রাত নেই খালি পিসির সামনে বসে থাকত। ডলার জমাতে জমাতে ব্যাংকে পাহাড় করে ফেলল। তার পরেও থামে না! অথচ বড়লোক বাবার আদরের একমাত্র ছেলে সে। ফ্রিলান্সিং করার কোন দরকারই নেই। বাপের এত সম্পদ কে খাবে। কিন্তু কে শোনে কার কথা, সে ফ্রিলান্সিং করছেত, করছেই। এটাই তার জীবন এটাই তার মরণ।
 
মা বাবা চিন্তিত হয়ে পড়ল। ভাল দেখে এক সাইক্রিয়াটিস্ট এর কাছে নিয়ে গেল। ডাক্তার দেখে বলল, লক্ষণ বিশেষ সুবিধার না। পাগল হবার পূর্বের অবস্থা। আপাতত কিছু ওষুধ দিয়ে বিদায় করে দিল। কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না। সে দিন রাত পিসির সামনে বসে থেকে, ফ্রিলান্সিং চালিয়ে যেতে লাগল। শেষমেস আমাদের দেশে পাগলের প্রথম যে চিকিৎসা, সেটা প্রয়োগ করা হল। মানে খুবই সুন্দরী, ডানাকাটা পরি, অষ্টাদশী এক মেয়ের সাথে, ছেলের বিয়ে দেয়া হল। কিন্তু কিসের কি, বাসর রাতে সে সুন্দরী বউকে বিছানায় বসিয়ে রেখে বায়ারের কাজ করতে লাগল। এমনকি সারারাত কাজ করে সে আপওয়ার্কে ১০০ ডলার ইঙ্কামও করে ফেলল 😀 সুন্দরী বউয়ের দিকে না তাকিয়ে সে দিনের পর দিন ফ্রিলান্সিং করে যেতেই লাগল। সুন্দরী বউ অনেক জোরাজুরি করেও তাকে ফ্রিলান্সিং থেকে ফেরাতে পারল না , আহারে বেচারি।
 
এসব দেখে সাইক্রিয়াটিস্ট মত দিল, ছেলে এখন বদ্ধ পাগল তাকে দ্রুত পাবনা হেমায়েতপুরে পাঠান হোক। কাজেই সবাই মিলে তাকে হেমায়েতপুর পাঠিয়ে দিল ০৬ মাসের জন্য! কিন্তু এই ০৬ মাসে তার মধ্যে পাগলামির কোন লক্ষণ দেখা গেল না। সব কিছু স্বাভাবিক! ডাক্তারেরা ধরেই নিল সে এখন পুরাপুরি সুস্থ। কোন পাগল ভাল হয়ে গেলে, ছেড়ে দেয়ার পূর্বে তাকে চুড়ান্ত একটা ইন্টার্ভিউ দিতে হয়! যাহোক একদল অভিজ্ঞ বয়স্ক ডাক্তারদের সামনে, তাকে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়েছে। ডাক্তারের দল আর ফ্রিলান্সারের মধ্যে কথা হচ্ছে…
 
ডাক্তারেরাঃ কি অবস্থা? এখন কি সুস্থ?
ফ্রিলান্সারঃ জি স্যার সুস্থ
ডাক্তারেরাঃ বাড়িতে যেয়ে কি করবা?
ফ্রিলান্সারঃ প্রথমেই দোতালার কোনার ঘরে চলে যাব!
ডাক্তারেরাঃ কেন? কেন?
ফ্রিলান্সারঃ কারন ওটাই আমার ঘর, সেখানে আমার সুন্দরী বউ থাকে
ডাক্তারেরাঃ এর পর…
ফ্রিলান্সারঃ প্রথমে তাকে জড়িয়ে ধরব
ডাক্তারেরাঃ তাই নাকি (বুড়া ডাক্তারেরা নড়েচড়ে বসল )
ফ্রিলান্সারঃ এর পরে এক টানে তার শাড়ি খুলে ফেলব, আমার বউ শাড়ি পরে, গ্রামের মেয়েত!
(ভয় নেই নিচে সায়া ব্লাউজ আছে )
ডাক্তারেরাঃ উম্মা তাই নাকি? তাই নাকি? এরপর…
ফ্রিলান্সারঃ তাকে এক ধাক্কা দিয়ে খাটে শুইয়ে দেব
(বুড়া ডাক্তারগুলো চূড়ান্ত উত্তেজিত হয়ে পড়েছে! এমন থ্রিলার গল্প তাঁরা কোন পাগলের মুখ থেকে শুনেনি, তাঁরা কিছুটা ঘেমেও যাচ্ছে, কয়েক জনের প্রেশার বেড়ে গেছে, গলার মুখ শুকিয়ে আসছে)
ডাক্তারেরাঃ এর পরে কি? এর পরে কি?
ফ্রিলান্সারঃ শাড়ি দিয়ে তাকে বিছানার সাথে ভাল করে বেঁধে ফেলব, যেন নড়াচড়া না করতে পারে, আমার কাজে যেন কোন ব্যাঘাতে ঘটাতে না পারে 😉
(বুড়া ডাক্তারেগুলো, নিজেদের আর ধরে রাখতে পারছে না, উত্তেজনার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে)
ডাক্তারেরাঃ তার পরে কি? তার পরে কি? (সবার চোখ চক চক করছে)
ফ্রিলান্সারঃ এর পরে ধিরে সুস্থে, পিসির সামনে বসে, আবার ফ্রিলান্সিং শুরু করে দেব 😀
 
ডাক্তারেরা, ওরে তোরা কে কোথায় আছিস, এরে ধর, আরও ৬ মাসের জন্য এরে পাগলা গারদে আটকা।

Similar Posts