বিপদে বন্ধুর, প্রকৃত পরিচয়
কোন কারনে মনটা আজ কিছুটা উদাস ছিল। আর মনটা উদাস হলে, পুরোনো সৃতিগুলো ঘুরে ফিরে আসে। আজকে কেন জানি একটা পুরাতন সৃতি মনে পড়ে গেল। কিছুটা আবেগ আপ্লুত হয়ে গেলাম। আসলে যে লেখাটা লিখছি, সেটা একজনের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ। তাহলে শুরু করা যাক।
২০০৮ সালের কথা, আমি তখন ঢাকায় একটা বড় ফারমাসিউটীক্যাল কোম্পানিতে এরিয়া ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলাম। পিজি হাসপাতাল (বতমানে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়), ঢাকা মেডিকেল কলেজ, সেন্ট্রাল রোড, গ্রিন রোডের বড় বড় সব হাসপাতাল, সহ বিশাল এলাকা আমি দেখতাম। ১১ জন টীম মেম্বারের বড় টিম ছিল। বলা যায় ম্যানেজমেন্টের খুব কাছের একজন ছিলাম, তখন প্রচুর ব্যাস্ততা আমার। মনে আছে, তখন পিজি হাঁসপাতাল থেকে, প্রায়ই ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের মোটরসাইকেল চুরি হত। মাসে অন্তুত ১৫/২০ টা চুরি হত। তখন সিসি ক্যামেরার এত প্রচলন ছিল না। ফলে কখনো কোন চোর ধরা পড়েছে বলে শুনিনি। মোটরসাইকেল চুরি ছিল আমাদের কাছে সাক্ষাৎ আতংক। কারন ঢাকায় মোটরসাইকেল ছাড়া মারকেটীং এর কাজ করার কথা, চিন্তাও করা যেত না।
তখন দুপুর একটার পরে মেডিকেল কোম্পানির প্রতিনিধিরা হাসপাতালে ডাক্তারদের ভিজিট করতে পারত। এখন কি অবস্থা জানি না। সকাল থেকে আমরা মিটিং, চা পান আড্ডায় ব্যাস্ত থাকতাম। ১ টা হলেই সবাই ব্যাস্ত হয়ে পড়তাম ডাক্তার ভিজিটে। আর এই সময়টায় মোটরসাইকেল চুরি হত সব থেকে বেশি। মনে আছে সেই দিনটার কথা, ঢাকা মেডিকেলে কাজ শেষে, দুপুর ১ টার আগে পিজিতে এসেছি আমার টীমের ছেলেদের সাথে কাজ করার জন্য। সি ব্লকের তিন তালার নিউরোমেডিসিন থেকে আমার এক টিম মেম্বার কল দিল যে, ডাক্তার ভিজিট শুরু হচ্ছে, আমি এখন আসতে পারি। আমি সেদিকে হাটা দিলাম। সি ব্লকের কাছে এসেছি, এমন সময় আমাদের হেড অফিস থেকে আমার বস কল দিল। জরুরী একটা কাজে এখনই অফিসে আসতে হবে। আমাদের হেড অফিস ছিল, তেজগাঁওয়ের চ্যানেল আই অফিস বিল্ডিঙে।
মেজাজ খারাপ হয়ে গেল, কারন অফিসে গেলেই একগাঁদা কাজ ধরিয়ে দেবে, আর দুপুরে বাসায় যাওয়া হবে না, রেস্ট নেওয়া হবে না। হোটেলে খেয়ে বিকালে আবার কাজ শুরু করতে হবে। মনে মনে কোম্পানির চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করতে করতে, মোটরসাইকেল দিকে আবার ফেরত যাচ্ছি। মনে আছে তখন পিজি হাসপাতালের পিছনে ওষুধ কোম্পানির শত শত মোটরসাইকেলগুলো সারি সারি ভাবে রাখা থাকত। আমার মোটরসাইকেলটা ছিল বিসিএস ট্রেনিং সেন্টারের দেয়াল ঘেঁসে রাখা। যখন মোটরসাইকেলের কাছ আসলাম তখন দেখি, একটা ছেলে আমার মোটরসাইকেলের উপর বসে আছে, আরেকজন সামনের চাকার সামনের দিকে বসে, কি যেন করছে। মোটরসাইকেলের উপর বসে থাকা এটা স্বাভাবিক ঘটনা ছিল। অনেকেই বসে থাকত। আমি বললাম ভাই একটু নামেন, আমি বের হব। ছেলেটা নেমে গেল। আমি যখন চাবি ঢোকাতে যাব তখন খেয়াল করলাম যে, যে ছেলেটা সম্নের চাকার সামনে বসে ছিল, সে কিছু যন্ত্রপাতি ব্যাগে দ্রুত ঢোকাচ্ছে। আমি ধরতে পারলাম যে, সেগুলো ছিল আসলে তালা খোলার যন্ত্র। একদিন আগেই, একজনের মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। চৈত্রের এর প্রচন্ড গরমে, জ্যাম ঠেলে অফিসে যাওয়ার কথা শুনে মেজাজ এমনিতেই খারাপ, এর পর এভাবে হতে নাতে চোর ধরা, আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। চ্যালেঞ্জ করলাম, এই তোমরা কারা? এখানে কি কর? ব্যাগে কি আছে দেখি?
তারা আমতা আমতা করতে লাগল। একজন বলল ব্যাগ কেন দেখাব? আমরা গ্যারেজে কাজ করি, এগুলো আমাদের যন্ত্রপাতি। আমি বললাম গ্যারেজে কাজ কর ভাল কথা, কিন্তু এই প্রচন্ড রোদে, আমার মোটরসাইকেলের কাছে তোমাদের কি কাজ। তার উত্তর দিতে পারল না। আমতা আমতা করতে লাগল। আমি সাথে সাথে মোবাইল বের করে, আমার কয়েকজন কলিগকে ফোন দিতে লাগলাম। সবাইকে বলতে লাগলাম, ভাই তাড়াতাড়ি আসেন হাতেনাতে ধরেছি। সত্যি বলতে, নিজেকে তখন কিছুটা হিরো হিরো মনে হচ্ছিল। কিন্তু এর পরে যা ঘটল, তাতে আমি কোন মতেই প্রস্তুত ছিলাম না। দুই জনের একজন চিৎকার করে, কাদের যেন ডাকতে লাগল। মুহূর্তে মধ্যে পাশের বস্তি থেকে অন্তত ৫০/৬০ জন দৌড়ে এসে, আমাকে ঘিরে ধরল। আমার পিছনে বিসিএস একাডেমির উচু দেয়াল, আর সামনে উন্মুত্ত জনতা। আমি যেন একেবারে ফাঁদে পড়া ইঁদুর। আমাকে হেল্প করার মত কেউ নাই। কারন ওষুধ কোম্পানির সবাইক ডাক্তার ভিজিটে ব্যাস্ত।
উপস্থিত লোকদের উদ্দেশ্যে ছেলে দুইটা বলল, এই লোকের মোটরসাইকেলে আমরা বসেছিলাম। সে এসে বলে, আমরা নাকি চোর, মোটরসাইকেল চুরি করতে এসেছি। এই কথা বলার সাথে সাথে, হই হই করে পুরা জনতা প্রচন্ড উত্তেজিত হয়ে গেল। এত বড় কথা, আমার কলার ধরে, একজন বলল, বল তোর কাছে কি প্রমাণ আছে? আমি আর কি প্রমাণ দেব, কারন তাদের হাতে থাকা যন্ত্রপাতির ব্যাগ, অনেক আগেই উধাও হয়ে গেছে। যে আমি কিছুক্ষণ আগে নিজেকে হিরো ভাবছিলাম, এখন আমি হয়ে গেলাম ভিলেন। আমার কাছে প্রমাণ করার কিছুই নেই। উপস্থিত জনতা প্রচন্ড উত্তেজিত, একজন এসে আমার তলপেটে প্রচন্ড একটা ঘুষি মারল। প্রচন্ড ব্যাথায় আমার মনে হল ইউরিন ব্লাডার ফেটে গেছে। দম বন্ধ হয়ে গেল, চোখে সর্ষে ভুল দেখলাম, কয়েকজন বুকে আর মুখে ধামাধাম কয়েকটা ঘুষি মারল। সব ছিল ইয়াং এবং অধিকাংশকেই নেশাখোর মনে হল। পিজির পাশের বস্তির অনেক বদনাম শুনেছি, আজকে বাস্তব দেখতে পেলাম। সেই বস্তি এখন আছে কিনা জানি না। থাকার কথাও না।
কয়েকজন পকেটে হাত দিয়ে, কিছু বের করতে করতে বলছে, যে একে বাঁচিয়ে রাখা যাবে না, সাহস কত বড়, আমাদের ভাইকে চোর বলে। বুঝতে পারলাম তারা ছুরি টুরি জাতিয় কিছু একটা বের করতে যাচ্ছে। আমি প্রমদ গুনলাম, তলপেটের প্রচন্ড ব্যাথায় কাতরাচ্ছি। কিছু দিন আগে, পরপারে চলে যাওয়া আমার আব্বার ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠল। মনে হল আমিও দ্রুত তার কাছে চলে যাবে। সত্যি বলতে, তখন আমার মধ্যে মৃত্যু আতংক পেয়ে বসল। সবাই মিলে প্রচণ্ড মার দেয়া শুরু করলে, আমার বাচার কোন সুযোগই নেই। বুঝতে পারলাম, আজকেই হয়ত আমার জীবনের শেষ দিন। কারন বুকে বা পেটে যদি তারা কেউ ছুরি মারে, তাহলেই সব শেষ। এই দুপুরের প্রচন্ড গরমে, এই বর্বর লোক গুলো, খুনের নেশায় উন্মত্ত। আমাকে বাচাবার কেউ নেই। আল্লাহকে ডাকতে লাগলাম। মায়ের কথা মনে পড়ল, নতুন বউয়ের কথাও মনে পড়ল। বেচারি এত আল্প বয়সেই বিধবা হবে, ভাবতেই খুব কষ্ট লাগল। তাদের কিল ঘুষির মাঝেই দেখলাম, আমার বেশ কয়েকজন গলিগ চলে এসেছে। আমি আশার আলো দেখতে পেলাম। কিন্তু ওমা, ওরা দেখি কেউ এগোচ্ছে না। দূরে দাড়ীয়ে তামাশা দেখছে। কয়েকজন দেখি পিঠ ঘুরিয়ে, আস্তে করে চলে যাচ্ছে। বুঝলাম তারা এই বিপদে কোন মতেই জড়াতে চাইছে না।
ছোটবেলা থেকেই মানুষের সাথে মিশে যাবার সহজাত অভ্যাস আমার। খুব সজেই আসর মাতাতে পারি। সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মত আমার কথা শোনে। সবাই আমাকে ভাল জানে, ভালবাসে। এই কলিগদের সাথে আমার খুবই ভাল রিলেশন। কত দিন চা নাস্তা করতে করতে আড্ডা দিয়েছি, কত জনেকে, কত ভাবেই না হেল্প করেছি। সুখে দুঃখ পাশে থেকেছি। অথচ আজ তাদের কেউই, আমার এই কঠিন বিপদে এগিয়ে আসছে না। আমি অসহায়ের মত তাকিয়ে রইলাম, আর চূড়ান্ত খারাপ কিছুর অপেক্ষায় রইলাম। সব কিছু খুব দ্রুত ঘটছিল। আল্লাহ্ আমার উপর যেন একটু করুণা বর্ষণ করলেন। জানিনা কোথা থেকে আমার এক কলিগ হঠাৎ উদয় হলে। নাম তার সোহরাওয়ার্দী, প্রায় ৬ ফুল লম্বা, পাহাড়ের মত বিশাল শরীর। সে দুই হাতে ভীড় ঠেলে, চিৎকার করতে করতে, ঠিক আমার সামনে এসে দাড়াল। বিশাল দেহ দিয়ে, আমাকে আড়াল করে মারমুখী জনতার সামনে বুক চিতিয়ে দাড়াল। আমাকে জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে? আমি বললাম এরা আমার মটোরসাইকেল চুরি করছিল, আমি হাতে নাতে ধরেছি। বলার সাথে সাথে, জনতা চিৎকার করে আরও উত্তেজিত হয়ে উঠল। কয়েকজন আমার শার্ট প্যান্ট টেনে ধরে, আমাকে ছিনিতে নিতে চাইল। সার্টের কয়েক জায়গায় ছিড়ে গেল। সোহরাওয়ার্দী ভাই চিৎকার করে বলে উঠল, সবাই মাথা ঠাণ্ডা করেন, ব্যাপারটা আমি সমাধান করছি। আর যদি একে মারতেই চান, তবে আগে আমাকে মারতে হবে। কিন্তু কে শোনে কার কথা, জনতা তাকেও মারতে উদ্দত হল। সেই ভিড়ের মধ্যে, এক লোক ছিল তার পূর্ব পরিচিত। সোহরাওয়ার্দী ভাই তাকে কাছে ডেকে বলল, এ হচ্ছে আমার কলিগ এবং বন্ধু, আপনি ভাই ঝামেলা যাভাবে হোক মিটান একে বাঁচান। সেই লোক, আমাকে মোটর সাইকেল স্টার্ট দেয়া ইঙ্গিত করল। তারা দুইজন মিলে, চিৎকার করে উন্মত্ত জনতাকে থামাতে চাইল। তাদেরকে ধাক্কা দিয়ে বের হবার জন্য সামান্য একটু জায়গা করে দিল। আমি মোটরসাইকেল স্টার্ট দিয়ে, একটানে সেই ছোট ফাক গলে বের হয়ে গেলাম। আমার লক্কড় ঝক্কর মার্কা মোটরসাইকেলে সমস্যা ছিল, সহজে স্টার্ট নিত না। জানি না সেদিন সাথে সাথে স্টার্ট না নিলে আমার কি হত। উন্মত্ত জনতা আমার পিছু ধাওয়া করল। ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে, আমি শাহবাগের মোড় হয়ে, ঝড়ের গতিতে তেজগাঁও হেড অফিসের দিকে ছুটে যেতে লাগলাম। কিভাবে অফিসে পৌঁছলাম, আমি জানি না। তলপেট সহ শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা নিয়ে, এই প্রচন্ড গরমে ঘেমে নেয়ে আমি একাকার। বুঝতে পারলাম আল্লাহ আমার হায়াত রেখেছেন, মায়ের দোয়া হয়ত আমার সাথে ছিল। আমি কৃতজ্ঞতায় ফুপিয়ে ফুপিয়ে আমি কাঁদতে লাগলাম। বুঝতে পারলাম, নতুন করে আমার দ্বিতীয় জীবন শুরু হয়েছে। অন্তর থেকে সোহরাওয়ার্দী ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা চলে আসল।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, অন্য কলিগদের সাথে আমার ভাল সম্পর্ক থাকলেও এই লোকের সাথে আমার সম্পর্ক খুব একটা ভাল ছিল না। তার বাড়ি ছিল উত্তরাঞ্চলে, সহজ সরল মানুষ, অপ্রিয় সত্য কথা, সরাসরি মুখের উপর বলে দিত। ফলে তার সাথে একটু দূরত্ব ছিল। প্রফেশনাল সম্পর্ক হয়ত ছিল, কিন্তু অন্তরঙ্গতা তেমন ছিল না। অথচ এই লোকটাই, নিজের জীবন বিপন্ন করে, বুক পেতে দিয়ে আমাকে আগলে রেখে, আমার জীবনে বাঁচিয়েছে। এই ঋণ আমি আসলে কিভাবে শোধ করি। অথচ আমার এই ঘোর বিপদের সময়, আমার তথাকথিত সেই বন্ধুরা কেউ এগিয়ে আসেনি। পরের দিন যখন তাদের সাথে দেখা হল, তখন সবাই স্বাভাবিক। কয়েক জন আমাকে দোষারোপ করল, আমার নাকি এত রিস্ক নেয়া উচিৎ হয়নি। কেউ কেউ অজুহাত দিল যে, এতগুলো লোকের সাথে তারা পারবে না, তাই তারা এগোয়নি। অজুহাত দিল, তারা নাকি পুলিশ ডাকতে গিয়েছিল। আমি আর কিছু বলিনি, আমার যা বুঝার বোঝা হয়ে গিয়েছিল। এর পর থেকে, সেই সব বন্ধুরূপি কলিগদের থেকে দূরে থেকেছি। উপরে সম্পর্ক ঠিকঠাক থাকলেও, মনেপ্রানে তাদের ঘৃণা করেছি। সেই শিক্ষা আমি এখনো ফলো করি।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, লজ্জায় হোক বা সংকোচে হোক, যে লোক আমার জীবন বাঁচালো সেই সোহরাওয়ার্দী ভাইকে ধন্যবাদটুকু দেয়া হয়নি। কিন্তু কামরুজ্জামান অকৃতজ্ঞ না। আমি এখনো তাকে ঠিকই মনে রেখেছি, তার জন্য দোয়া করি। আমি জানি সোহরাওয়ার্দী ভাইয়ের কাছে এই লেখা পৌঁছাবে না। তবে আমার আগের চাকরির কয়েকজন কলিগ, এখনো আমার ফ্রেন্ডলিস্টে আছে। তাদের কারো চোখে যদি এই লেখা পরে, আর সোহরাওয়ার্দী ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ থাকে। তবে বলব, তাকে একটু বলবেন যে, কামরুজ্জামান এখনো তাকে স্মরণ করেন। তার জন্য দোয়া করে। মহান রাব্বুল আলামিন যেন তার ভাল করেন, তাকে নিরাপদে রাখেন।
ধন্যবাদ!
(পুনশ্চঃ আমার সাথে এই ঘটনা ঘটার কিছু দিন পরে, পিজি হাসপাতালের পাশের আজিজ সারজিক্যাল দোকানের পাশে সেই একই যায়গায়, রাত ১২ টার সময় ছিনতাইকারিদের ছুরিকাঘাতে একজন নিহত হয়। তারা কারা ছিল সেটা নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না। )