আমার অভ্র’র গল্প

 
আমি কম্পিউটার শিখছি সেই ১৯৯৮ সাল থেকে। জি আপনি ভুল শুনছেন না 🙂 আমার ফ্রেন্ড লিস্টের অনেকেই তখন ফিডার খাচ্ছিল, বা বিছানায় হিসু করছিল, অনেকে হয়ত পৃথিবীতেই আসেনি 🙂 জাস্ট মজা করলাম 😉
 
সেই সময় কম্পিউটার শেখা ছিল এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা। একটা পিসিতে চারজন পাঁচজন বসতাম। কি শিখতাম বলাই বাহুল্য 🙂 আমি সেদিকে যাব না । শিখতে যেয়ে জব্বার কাকুর বিজয় কী বোর্ডের প্রতি কি একটা কারনে এক ধরনের ভীতি চলে আসল। আমি বিজয়ের বদনাম করছি না। বিজয় অবশ্যই ভাল সফটওয়্যার। মনে হয় যিনি শেখাচ্ছিলেন, সম্ভবত তার কারনে এই ভীতির জন্ম। তার শেখাবার স্টাইল ভাল ছিল না। ফলে ইংরেজি লিখতে পারলেও বাংলা লেখা আর পারি না। এই ভীতি আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল। চাকরীতে জয়েন করার পর, অফিসের সব কাজ ইংরেজিতে করি, অনেক সুনাম আমার। অথচ মায়ের ভাষায় কিছু লিখতে পারি না :'( চেষ্টা করিনি যে তা নয়। তবে ঐযে বললাম এক ধরনের ভীতি 🙁 শেষমেষ ধরেই নিলাম এই জন্মে আমার বাংলায় টাইপ করা হবে না।
 
২০১২ সালের কথা। নতুন অফিসে জয়েন করেছি। প্রায় সময় পিসিতে কাজ করতে হয়। মাঝে মাঝে নেট ইউজ করি। আর তখনই অভ্র নামের একটা সফটওয়্যারের কথা শুনি। সহজেই নাকি বংলা লেখা যায়। কৌতূহলবশত ডাউনলোড করলাম। একটু চেষ্টাতেই বাংলা লিখতে পারলাম। পিসির স্ক্রিনের দিকে চেয়ে রইলাম। মনের অবস্থা আর নাইবা বললাম। চোখ দিয়ে কি কিছু গড়িয়ে পড়েছিল? কি জানি, জানি না, হয়ত চোখের মধ্যে কিছু একটা পড়েছিল! আমার প্রথম বাংলা লিখতে প্রায় ১৪ বছর লাগল। বলার ভাষা নেই।
 
এই অভ্রের জনক, আমাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ডাক্তার মেহেদী ভাই। জানি আমার এই লেখা তার কাছে পৌঁছাবে না। তবে একটা কথাই বলতে পারি, মনের গভীর থেকে সব সময় তার জন্য দোয়া করি। আমি এখন স্বাধীন, ইচ্ছামত লিখতে পারি। এই লেখালেখি থেকেই অনেকের সাথেই সম্পর্ক, বন্ধুত্ব আরও কত কি 🙂 অভ্র না হলে এর কিছুই হত না।
 
অভ্র এবং অভ্রের জনকের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা
 
ধন্যবাদ!

Similar Posts